তাজুল ইসলাম
নিজেদের অপরাধের অন্ত নেই। হত্যা, ধর্ষণ, মানি লন্ডারিংসহ নানা অপরাধে দণ্ডিত আসামি তাদের অনেকেই। একাধিক মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকার পরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চোখে ধুলো দিয়ে গোপনে দেশ ছেড়েছে তারা। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে বিভিন্ন দেশে নিয়েছে রাজনৈতিক আশ্রয়। পালিয়ে যাওয়া এসব অপরাধীরাই এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নীতি-নৈতিকতার ছবক দিয়ে বেড়াচ্ছে প্রতিনিয়ত। ফেসবুক, ইউটিউবে একাধিক অ্যাকাউন্ট খুলে নিজেদেরকে সুশীল হিসেবে উপস্থাপন করার পাশাপাশি রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচার চালাচ্ছে নিয়মিত। বিভিন্ন দেশে থাকা এসব লোকদের আইনের আওতায় আনতে না পারার জন্য কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগীসহ অনেকেই।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব ভয়ংকর অপরাধীর বিষয়ে সমন্বিত উদ্যোগ নেই। একে অপরের ওপর দায় চাপিয়েই নিজেদের দায়িত্ব শেষ করছেন তারা। যদিও বিদেশে থাকা এসব অপরাধীর বর্তমান এবং অতীত কর্মকাণ্ডের ফিরিস্তি তাদের কাছে রয়েছে। কূটনৈতিক চ্যানেল ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট দেশকেও আমরা তাদের বিষয়গুলো যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে পারছি না। এসব ব্যর্থতার কারণেই তাদের দৌরাত্ব রোধ সম্ভব হচ্ছে না। তারা নিয়মিত রাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের নামে সোশ্যাল মিডিয়ায় কাল্পনিক, বানোয়াট গল্প সাজিয়ে ‘ব্ল্যাকমেইল’ করে যাচ্ছে।
যুদ্ধাপরাধী ও তাদের পরিবারের মদদপুষ্ঠ, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিশালী চক্রটি দেশের অভ্যন্তরে ও বিদেশের মাটিতে বসে প্রতিনিয়ত দেশবিরোধী ও আওয়ামীলীগ সরকার বিরোধী নানা অপপ্রচার করে দেশের ক্ষতিসাধনের চেষ্টা চালাচ্ছে। দেশবিরোধী এই চক্রটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তথা ইউটিউব, ফেসবুক ব্যবহার করে নামে-বেনামে সরকার, প্রধানমন্ত্রী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, বঙ্গবন্ধু পরিবার, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সরকারের উচ্চপদস্থ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা, প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীসহ যেসব গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব বাংলাদেশের পক্ষে এবং ওই অপশক্তির বিরুদ্ধে ,কথা বলছেন ও কলম চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের সবার বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ হয়ে ঘৃণ্য ও ভয়ঙ্কর অপপ্রচার চালাচ্ছে।
অপরাধ বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন, পচাত্তুর আগেও দেশে অনেক গুজব তৈরি করা হয়েছিল। মাঝেমধ্যে সে রকম আশঙ্কাও দেখতে পাই আমরা। এখন বিভিন্ন দেশ থেকে এসব প্রচার চালানো হচ্ছে। বিদেশে বসে তাদের অনেকেই সস্তা জনপ্রিয়তার আশাতেও এমন ভয়ংকর অপতৎপরতা চালাচ্ছে। এর ফলে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বহির্বিশ্বে। তাই কর্তৃপক্ষের উচিত সমন্বিতভাবে বিষয়টির মোকাবিলা করা।
সাইবার অপরাধীদের কালো অধ্যায়
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো সাইবার সন্ত্রাসীদের মধ্যে অন্যতম হলো যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত সাজাপ্রাপ্ত এবং ইন্টারপোল ওয়ান্টেড জঙ্গী অর্থায়নকারী কর্নেল (বহিষ্কৃত) শহীদ উদ্দিন খান, সুইডেনে রাজনৈতিক আশ্রয় নেয়া নেত্র নিউজ নামের প্রোপাগান্ডা ওয়েব সাইটের এডিটর ইন চিফ এবং স্বঘোষিত দাঙ্গাবাজ, নাস্তিক ও সমকামী তাসনিম খলিল, কথিত সাংবাদিক, একাধিক ছিনতাই মামলার আসামী এবং হাঙেরী হতে অপকর্মের দায়ে বিতাড়িত ও বর্তমানে লন্ডনে অবস্থানকারী জুলকারনায়েন সায়ের খান সামি, কানাডা প্রবাসী সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর দেলোয়ার হোসেন, হলিআর্টিজন হামলায় নেপথ্য কারিগর হিসেবে সন্দেহভাজন, স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে আমেরিকায় পালিয়ে যাওয়া সেনা কর্মকর্তা লে কর্ণেল মুস্তাফিজুর রহমান, ইয়াবা তৈরিকারী ও মাদক মামলায় অভিযুক্ত বিদেশে পালিয়ে থাকা জামাত ঘরানার নব্যমুসলিম পিনাকী ভট্টাচার্য , জামাত শিবিরের ক্যাডার ও আমেরিকায় রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়া স্বঘোষিত সমকামী নাজমুস সাকিব, কানাডা প্রবাসী চাঁদাবাজ, জঙ্গি সংগঠন আল কায়েদা সংশ্লিষ্ট ভুঁয়া সাংবাদিক ও ইউটিউব-ফেসবুকভিত্তিক কথিত নাগরিক টিভির সিইও টিটো রহমান, বিদেশে পালিয়ে থাকা সাংবাদিক কনক সারোয়ার, রাজাকারের সন্তান দাবিদার আমেরিকায় পলাতক সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন, চ্যানেল আই ইউরোপ শাখার সাবেক প্রতিবেদক, বাংলাদেশ প্রতিদিনের ফিচার লেখক, লন্ডনে কলগার্ল হিসেবে সুপরিচিত হাসিনা আক্তার উল্লেখযোগ্য। আরো একজন আছে। তার নাম তাজুল ইসলাম হাশমী ওরফে তাজ হাশমী। খাটি মুসলমান দাবী করা এই তাজ হাশমীর কন্যা প্রায় উলঙ্গ অবস্থায় বিভিন্ন বার ও হোটেলে ঘুরে বেড়ায়। খদ্দেরদের মনোরঞ্জন করে। তাজ হাশমী’র বিরুদ্ধেও অসংখ্য নারী কেলেংকারির অভিযোগ আছে। এমনকি বাংলাদেশে বসবাসকালে এই পাষন্ডের যৌন লালসার থাবা থেকে বাসার কাজের বুয়াও রক্ষা পায়নি। একাধিকবার গর্ভধারণ করে ফেলায় কাজের বুয়াদের লুকিয়ে নিয়ে গিয়ে গর্ভপাত ঘটান হাশমীর স্ত্রী। হাশমীর স্ত্রীর বিরুদ্ধেও অবাধ যৌনাচার এমনকি গৃহভৃত্বের সাথে দৌহিক সম্পর্কের অভিযোগ অসংখ্য।
কর্নেল (বহিষ্কৃত) শহীদ উদ্দিন খান: প্রতারক এমএলএম কোম্পানি ডেসটিনির অন্যতম বেনিফিশিয়ারি, ভূমি দস্যু, অস্ত্র ও মাদক কারবারী, জাল টাকার ব্যবসায়ী ও ইন্টারপোল ওয়ান্টেড দণ্ডপ্রাপ্ত সন্ত্রাসী শহীদ উদ্দিন খান লন্ডনে বসে কয়েক বছর যাবত নানা ধরনের চাপাবাজি করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে জানা যায়, শহীদের সাথে কুখ্যাত মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহিমের ব্যবসায়িক সম্পর্ক আছে।
বেশ কয়েক বছর আগে দুর্নীতি, চুরি আর লাম্পট্যের অভিযোগে শহীদ উদ্দিন খানকে সেনাবাহিনী থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর সে তার শশুরবাড়ির মাধ্যমে ডেসটিনি গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে। শহীদের শ্বশুরবাড়ী কুমিল্লায় আর ডেসটিনির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনের বাড়ী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়। পরবর্তীতে মোহাম্মদ হোসেনের মাধ্যমে শহীদের পরিচয় ঘটে ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমিনের সাথে। রফিকুল আমিনকে জাল দলিলের মাধ্যমে ভুঁয়া জমি দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার কুবুদ্ধি দেয় শহীদ। এক্ষেত্রে প্রতারক রফিকুল আমিন তার অপরাধমূলক কাজকারবারে শহীদ উদ্দিন খানকেই মোক্ষম সহযোগী হিসেবে বেছে নেয়। এখানে উল্লেখ্য, শহীদ উদ্দিন খানের শ্বশুরবাড়ীর সাথে বঙ্গবন্ধুর খুনী খন্দকার মুশতাক আহমেদের আত্মীয়তা এবং গভীর সম্পর্ক ছিলো। এমনকি সেনাবাহিনীতে চাকরী করার সময় শহীদ বঙ্গবন্ধুর খুনী কর্নেল ফারুকের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার পাশাপাশি স্বাধীনতা বিরোধী এবং যুদ্ধাপরাধীদের সাথে ঘনিষ্ট যোগাযোগ রাখতো। আরো জানা যায়, শহীদ উদ্দিন খানের পরিবারের অনেকেই একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর দালালি করেছে, এমনকি শহীদের বাবা আর্মি ক্যাম্পে সবজি ও আটা সরবরাহের ব্যবসা করতো।
প্রতারণার দায়ে ডেসটিনির কর্তাব্যক্তিদের সবাই জেলে গেলে শহীদ উদ্দিন খান বাংলাদেশ থেকে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা অবৈধ পথে দুবাই ও লন্ডনে পাচারের পর পালিয়ে যায়।
এখন এই দুর্বৃত্ত শহীদ উদ্দিন খান নিজেকে সৎ, দেশপ্রেমিক ইত্যাদি দাবী করে ইউটিউবে নিয়মিত চাপাবাজি করছে। সে এমন কথাও বলছে, আগামীতে নাকি সে নিজেই রাষ্ট্রক্ষমতায় যাবে। কিন্তু অনেকেই এসব চাপাবাজির পেছনে আসল রহস্যের খবর রাখেননা। শহীদ নিজেও জানে, বাংলাদেশে সে ফিরে এলে বাকি জীবন কারাগারেই কাটাতে হবে। কারণ, সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে এরই মাঝে শহীদ ও তার স্ত্রী ফারজানা আঞ্জুমের যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে। তার মেয়েরাও সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী। এক্ষেত্রে প্রতারক শহীদ ব্রিটেনে তার নিজের দুর্বৃত্তপনার বিষয়গুলো ধামাচাপা দিতেই ফেইসবুক ও ইউটিউবের মাধ্যমে চাপাবাজি চালিয়ে যাচ্ছে।
জুলকারনাইন সায়ের: কখনও তানভীর সাদাত, কখনও সায়ের জুলকারনাইন। আবার কখনও জুলকারনাইন সায়ের খান, এভাবে নাম বদলে প্রতারণাসহ অগণিত অপরাধের সঙ্গে জড়িত প্রকৃত নাম সামিউল আহমেদ খান। অল্প বয়সে মাকে হারানোর পর চুরি ও প্রতারণামূলক অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে বদলে ফেলেন মায়ের রাখা নাম ‘তানভীর মোহাম্মদ সাদাত খান’।
কৈশোর বয়সে চুরিতে হাত পাকান সামিউল আহমেদ খান ওরফে সায়ের জুলকারনাইন ওরফে সামি। ১৭ বছর বয়সে ২০০০ সালের ৩০ জানুয়ারি ইসিবিতে কর্মরত মেজর ওয়াদুদের বিদেশ থেকে আনা ট্র্যাকস্যুট চুরি করে ধরা পড়েন। ২০০০ সালের জুলাই মাসে টাইগার অফিসার্স মেস থেকে হাতির দাঁত চুরি করে চট্টগ্রামের নিউমার্কেটে অঙ্গনা জুয়েলার্সে বিক্রি করেও ধরা পড়েন।
বাবার চাকরির সুবাদে নিজেকে কখনও সেনাবাহিনীর সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট, কখনও ক্যাপ্টেন হিসেবে মিথ্যা পরিচয় দিতেন। ২০০১ সালের ২৮ ও ২৯ এপ্রিল ঢাকা সেনানিবাসে নিজেকে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রবেশ করে সামি। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বন্ধু উৎপলের কাছে নিজেকে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে প্রমাণের জন্য বেল্ট, বুট ও র্যাংক ইউনিফর্ম কেনেন। উৎপলের বাসা থেকেই সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরে ট্যাক্সি ক্যাব দিয়ে সেনানিবাসসহ ঢাকার একটি পত্রিকা অফিস, রাপা প্লাজা, ধানমন্ডি ও চিড়িয়াখানা ঘুরে জাহাঙ্গীরগেট হয়ে সিএমএইচে প্রবেশের সময় দুপুর ২টায় মিলিটারি পুলিশের (এমপি) হাতে ধরা পড়ে সামি। এর ঠিক দু’দিন পর ২ মে বাবার অঙ্গীকারনামায় আর্মি এমপি ডেস্ক থেকে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
২০০৬ সালের ২১শে জুলাই জুলকারনাইন সামি ঢাকার এলিফ্যান্ট রোড এলাকায় মোবাইল ফোন ছিনতাই করতে গিয়ে জনতার হাতে ধরা পড়ে বেদম পিটুনি খায়। এরপর তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হলে ছিনতাইকারী সামির বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় মামলা হয়। মামলা নম্বর ৪৩, ধারা ১৪০, ১৭০, ১৭১, ৪১৯, ৪৩৫, ৪৬৭ এবং ৪৭২। এছাড়াও ছিনতাইকারী সামির বিরুদ্ধে আরো অসংখ্য অভিযোগ আছে। ক্রমাগত অপরাধের কারণে ছিনতাইকারী সামির পক্ষে যখন ঢাকায় থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ে তখন সে হাঙ্গেরীতে পালিয়ে যায়। এর আগে ছিনতাইকারী সামির বাবা তাকে ত্যাজ্যপুত্র ঘোষণা করেন। ২০০৬ সালের ২৩ জুলাই এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন লে. কর্নেল আবদুল বাসেত।
২০২০ সাইবার ক্রাইম ইউনিট অনলাইনে জাতির পিতা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে কটূক্তি ও আপত্তিকর প্রচারণা এবং করোনা ভাইরাস নিয়ে অপপ্রচারসহ বিভিন্ন গুজব রটিয়ে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে তাদের মধ্যে অন্যতম শায়ের জুলকারনাইন সামি। উই আর বাংলাদেশি পেইজ থেকে রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণার অভিযোগে অভিযুক্তদের ল্যাপটপ ও মোবাইল অনুসন্ধান করে ১১ জনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পায় গোয়েন্দা বাহিনী। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাসনিম খলিল ও সামিসহ উক্ত ১১ জনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ৬ মে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা করে র্যাব-৩।
সামি হাঙেরী হতে বিতাড়িত হয়ে প্রায় বছর খানেক আগে হতে লন্ডনে অবস্থান করে আরেক সাইবার সন্ত্রাসী, নিজেকে সমকামী পরিচয় দিয়ে সুইডেনে বসবাসকারী নেত্র নিউজের তাসনিম খলিলের সাথে মিলে প্রতিনিয়ত দেশবিরোধী অপপ্রচার চালাচ্ছে।
টিটো রহমান : পুরো নাম মোস্তাফিজুর রহমান টিটো। ২০০৫ সালে ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলার আসামি টিটো দিনাজপুর পৌরসভার ইটগাঁও আবাসিক এলাকার বাসিন্দা। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার কারিগর আবদুস সালাম পিন্টুর ঘনিষ্ঠজন বলে দাবি করেন নিজেই। দেশের বিভিন্ন এলাকায় হওয়া একাধিক মামলার আসামি হয়ে কানাডা পালিয়ে গিয়ে নিয়েছেন রাজনৈতিক আশ্রয়। একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন, থাকেন শ্রমিকদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া একটি ফ্ল্যাটে, পাশাপাশি সরকারের রিফিউজি ভাতা পান নিয়মিত। জীবনে কখনো সাংবাদিকতার ধারেকাছেও ছিলেন না। তবে আগের পরিচয় আড়াল করতে টিটো নিজেকে কানাডার কথিত নাগরিক টেলিভিশনের ‘সিইও’ বলে পরিচয় দেন। প্রবাসে থেকে এই নাগরিক টিভি নামে ইউটিউব ও ফেসবুকভিত্তিক পেজ খুলে চালিয়ে যাচ্ছেন সরকারবিরোধী জঘন্য সব কর্মকা । টার্গেট করে দেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে নানা গুজব, মিথ্যা তথ্য ও অপপ্রচার চালান। একপর্যায়ে ‘ব্ল্যাকমেল’ করে টাকাপয়সা দাবি করেন। রফাদফা না হলেই আপলোড হতে থাকে তাদের তৈরি করা একের পর এক কল্পিত নোংরা কন্টেন্ট।
তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কথিত সাংবাদিক টিটোর প্রধান উদ্দেশ্য দেশকে ব্যর্থ ও অকার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে বহির্বিশ্বে প্রমাণ করা। ২০১৮ সালে সরকারের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের উসকানি দিয়ে সহিংসতার দিকে ঠেলে দেওয়ার মাস্টারমাইন্ড এ টিটো। তার বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী এবং সরকারি কর্মকর্তার কাছে চাঁদা চাওয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
নাজমুস সাকিব : কানাডায় বসে কথিত ‘নাগরিক টিভি’ নামের ফেসবুক এবং ইউটিউব চ্যানেলে দিনরাত সরকারের শীর্ষ ব্যক্তি, বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিয়মিত মিথ্যাচার করেন। দেশে থাকতে ছিলেন শিবিরের সক্রিয় কর্মী। বিএনপি-জামায়াতের কাছ থেকে নিয়মিত অর্থ পান নাজমুস সাকিব। তারেক রহমানের সঙ্গে সরাসরি যোগযোগ রাখা সাকিবের মূল টার্গেট সোশ্যাল মিডিয়ায় বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নিয়ে অপপ্রচার চালানো। জানা গেছে, নিউইয়র্ক ও লন্ডনে জামায়াত নেতা, যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর রেখে যাওয়া অর্থ তাকে পাঠানো হয় প্রতি মাসে। এ টাকা দিয়ে নাজমুস সাকিব গং নাগরিক টিভি নামের একটি আইপি টিভি খুলে সরকারবিরোধী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন নিয়ম করে। ধর্ষণ, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ বিভিন্ন ধারায় নাজমুস সাকিবের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা। দেশ ছাড়ার আগে ২০১১ সালে রাজধানীর সবুজবাগ এলাকায় পাঁচ বছর বয়সী একটি শিশুকে ধর্ষণ করেছিলেন নাজমুস সাকিব। ধর্ষণের শিকার সেই ছোট্ট শিশুটি কথা বলার শক্তি হারিয়ে এখন বাকপ্রতিবন্ধী। ২০১১ সালে ঘটনাটি তোলপাড় হয়েছিল দেশজুড়ে। সে সময় পুলিশ তাকে গ্রেফতারে তৎপরতা শুরু করলেও তিনি গা ঢাকা দেন। পাড়ি জমান আমেরিকায়। ওই ঘটনায় রাজধানীর সবুজবাগ থানায় একটি মামলা করেছিল শিশুর পরিবার। তদন্তে পুলিশ ঘটনার সত্যতা পেয়েছিল।
মামলার সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে সম্প্রতি সবজুবাগ থানার ওসি মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, ‘মামলাটি অনেক পুরনা। আমি থানায় নতুন। তবে যতটুকু যানি ওই মামলার তদন্ত শেষে শিশুটিকে ধর্ষণে জড়িত অভিযুক্ত করে নাজমুস সাকিবের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।’
শুধু এ শিশুই নয়, নাজমুস সাকিবের বিরুদ্ধে আরও অনেক ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিকৃত যৌনাচারে অভ্যস্ত নাজমুস সাকিব নিজের খালাতো বোন ‘কাজী রুবাইয়া’কেও ধর্ষণ করেন। এরপর রুবাইয়া গর্ভবতী হয়ে পড়লে পরিবারের চাপে তাকে বিয়ে করেন তিনি। নিজ এলাকাতেই একাধিক যৌন নির্যাতনের অভিযোগ আছে নাজমুস সাকিবের বিরুদ্ধে। খিলগাঁও, সবুজবাগ এবং মতিঝিল থানায় রয়েছে একাধিক মামলা এবং সাধারণ ডায়েরি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাজমুস সাকিবের বাসাবোর বাড়ির ভাড়াটিয়া কুমিল্লার দাউদকান্দির রেজাউল করিমের স্ত্রীকেও দলবেঁধে ধর্ষণ করেছিল নাজমুস সাকিব ও তার দল। ২০১০ সালের সেই ঘটনার পর এলাকা ছাড়েন ওই স্বামী-স্ত্রী। লোকলজ্জার ভয়ে সেদিন মামলা করেননি, নীরবে বাড়ি ছেড়েছিলেন তারা। সেই রেজাউল এখন মিরপুরের পীরেরবাগ এলাকায় থাকেন। তিনি বলেন, নাজমুস সাকিবের শাস্তি চাই। খোঁজ নিয়ে জেনেছি নাজমুস সাকিব এখন নাকি আমেরিকায় গিয়ে ইউটিউবে কীসের শো করে। তবে সেদিনের কথা এখন আর মনে করতে চাই না। তার যৌন নির্যাতনের কথা এখনো মনে হলে আমার স্ত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করে। আমরা সেই কষ্ট বুকে নিয়ে কোনোমতে বেঁচে আছি।
পিনাকী ভট্টাচার্য : রাজশাহী মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করা পিনাকী ভট্টাচার্য বগুড়া জিলা স্কুলের প্রয়াত শিক্ষক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শ্যামল ভট্টাচার্যের বড় ছেলে। একসময় আওয়ামী ঘরানার রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন, নিয়েছেন নানান সুযোগ-সুবিধা। তবে ২০১৮ সাল থেকে হঠাৎ করে সুশীল সাজতে শুরু করা এই চিকিৎসক সরকারের সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠেন। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অনেক ইস্যু এবং দিবসকে ঘিরে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার পাশাপাশি ছড়াতে থাকেন একের পর এক গুজব। প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে করেন কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য।
ফ্রান্সে রাজনৈতিক আশ্রয় নেওয়া এই ব্যক্তি ২০২০ সালে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যান। যাওয়ার আগে তিনি নিজেই গুম হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে বিভিন্ন প্রপাগান্ডা ছড়ান। পিনাকী ভট্টাচার্য ধর্মীয় উসকানি ছড়াতে ইউটিউবে তার নিজ চ্যানেলে সনাতন ধর্মের বিভিন্ন বিধান নিয়ে কট্টর সমালোচনা করেন। গো-হত্যার পক্ষে অবস্থান নিয়ে সনাতন ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে বিদ্বেষ ছড়ানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন তিনি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বিদ্রুপ, মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের বিপক্ষে প্রকাশ্যে অবস্থান, মঙ্গল শোভাযাত্রা ও বাংলা নববর্ষ পয়লা বৈশাখ উদযাপন বর্জনের ডাক দেওয়ার মতো বিতর্কিত কাজ করা যেন তার ‘রুটিন ওয়ার্ক’। ২০০৮ সালে সরকার বৈদেশিক অর্থায়নে সারা দেশে কালাজ্বরে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছিল। সে সময় টেন্ডারের মাধ্যমে দেশের যে ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ওষুধ তৈরির কাজটি পায় সে প্রতিষ্ঠানটির চিফ অপারেটিং অফিসার ছিলেন পিনাকী ভট্টাচার্য। পুরো প্রক্রিয়া দেখভালের দায়িত্ব ছিল তার। ক্যাপসুলে কালাজ্বরের অন্যতম উপাদান মিল্টেফস বা মিল্টেফসিন দেওয়ার কথা থাকলেও শুধু ময়দা দিয়ে ওষুধ তৈরি করা হয়, এ জালিয়াতির নেপথ্যে ছিলেন পিনাকী। সে সময় বিষয়টি নিয়ে দেশে-বিদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
পিনাকী ২০১৮ সালে পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানের কঠোর সমালোচনা করে মাদক কারবারিদের সমর্থন জোগান। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমর্থন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের নামে গুজব ছড়িয়ে স্কুল-কলেজের কোমলমতি শিশু-কিশোরদের উসকানি দিয়ে তাদের জীবন হুমকির মুখে ফেলারও অন্যতম কুশীলব তিনি। বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারণে ২০১৮ সালের ৫ আগস্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাকে তলব করে। এরপরই স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে গিয়ে গুম হওয়ার নাটক সাজানোর চেষ্টা করেন। দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি অবস্থায় গোপনে সীমান্ত পার হয়ে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ব্যাংকক যান এবং সেখানে কিছুদিন অবস্থান করে ফ্রান্সে পালিয়ে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় চান। বর্তমানে ফ্রান্সে বসে তিনি ধর্ম, দেশের কৃষ্টি-কালচার, সরকার, সেনাবাহিনী, বঙ্গবন্ধু পরিবারের বিরুদ্ধে ক্রমাগত বিদ্বেষ ছড়িয়ে যাচ্ছেন। এমনকি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীতের মতো বিষয়গুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা করছেন।
২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিজের লেখা ‘ভগবানের সহিত কথোপকথন’ সিরিজে সৃষ্টিকর্তাকে নিয়েও রসিকতা করেন পিনাকী। এ ছাড়া ব্লগার আসিফের ওপর হামলা ও অভিজিৎ রায়কে হত্যার পক্ষে কথিত যুক্তি তুলে ধরেন। ঢাকা মহানগর পুলিশের সিটিটিসি বিভাগ গত বছরের ১৫ অক্টোবর রাজধানীর রমনা থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা করে। মামলায় পিনাকী ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চক্রান্তে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়। এদিকে, ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম বলেন, বর্তমানে ঢাকায় দুই থেকে আড়াই হাজার সাইবার আইনের মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ৫ থেকে ৭ শতাংশ রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্র, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিষোদ্গার এবং মিথ্যা তথ্য ছড়ানো। গত তিন মাসে ১০০টি সাইবার মামলার সাজা হয়েছে। এবং ২০০টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। যা এ যাবৎকালের রেকর্ড। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেখুন এসব মামলার সর্বোচ্চ সাজা সাত বছর হওয়ায় আদালত আসামিকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য এখন পর্যন্ত কোনো আদেশ দেননি। তবে বিষয়টিকে অন্যভাবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক মনজুর রহমান। তিনি বলেন, পুলিশ সদর দফতর সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত মামলারগুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখে। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই আমাদের কাজ চলমান রয়েছে।
সাইবার অপরাধীদের নিয়ন্ত্রনে উদ্যোগ:
কিছুদিন আগেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে বলেছেন, “যারা (বিদেশে অবস্থা করে) সরকার বিরোধী কর্মকান্ড, উস্কানিমূলক ও বানোয়াট বক্তব্য প্রদানের সঙ্গে জড়িত, সরকার তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার জন্যে কাজ করছে।”
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরা এবং অপপ্রচার মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বাস্তবভিত্তিক সংবাদ ও নিবন্ধ প্রকাশের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে লক্ষণীয় যে, গত কয়েক বছর ধরে প্রায় অর্ধ শত ইউটিউব চ্যানেল ও শতাধিক সংখ্যক ফেইসবুক পেইজের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ক্রমাগত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি, বিএনপি-জামাত চক্রের সাথে রাষ্ট্র বিরোধী অপশক্তি লাখলাখ ডলার খরচ করে বিদেশের পত্র-পত্রিকায় নিয়মিতভাবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ও সংবাদ প্রকাশ করাচ্ছে। এসব প্রতিহত করার ক্ষেত্রে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কার্যকর কোনোকিছুই করতে পারছে না। কেনো পারছে না সে বিতর্কে না গিয়ে বরং বলবো, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হয়তো সীমাবদ্ধতা আছে। সঠিক লোকবল নেই, কিংবা বিদেশী পত্র-পত্রিকায় বাংলাদেশের পক্ষে ইতিবাচক প্রতিবেদন ও রিপোর্ট প্রকাশ করানোর মতো শক্তিশালী নেটওয়ার্ক নেই। এক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেই উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি অবশ্যই জানেন, এটা বাস্তবায়িত করতে কি কি করা দরকার।
তবে এরই মধ্যে সরকারের বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এইসব সাইবার সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সাধারন মানুষ এইসব সাইবার সন্ত্রাসীদেরকে ঘৃনাভরে প্রত্যাখান করেছে এবং দেশপ্রেমিক জনগন চায় সরকার যেনো এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
Leave a Reply