নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রধানমন্ত্রী নাকি সেন্টমার্টিন দিলে ক্ষমতায় থাকতে পারবেন এমন মন্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, সেন্টমার্টিন দিয়ে ক্ষমতায় থাকতে পারলে তিনি আগেই দিয়ে দিতেন।
শুক্রবার এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বর্তমান বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ শাসন ব্যবস্থার গুরুত্ব বিষয়ক জাতীয় প্রেসক্লাবের এক আলোচনা সভার আয়োজন করে আগামীর বাংলাদেশ।
গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, ৭১ সালের যুদ্ধ কিন্তু গণতন্ত্রের জন্য হয়েছিল। তখন স্বাধীনতার কথা উঠে আসেনি। মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান যদি স্বাধীনতার ডাক না দিতেন, তাহলে কিন্তু এই দেশ স্বাধীন হতো না। কারণ সেই সময়ের আওয়ামী নেতারা সীমান্ত পাড়ি দিতে গিয়ে জিয়াউর রহমানের ডাক শুনে ফিরে এসেছেন। হয়তো সীমান্ত পাড়ি দেননি।
গণতন্ত্রের শত্রু শেখ হাসিনা, আর হাসিনার শত্রু গণতন্ত্র এমন মন্তব্য করে গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, যেখানে হাসিনা থাকে, সেখানে গনতন্ত্র থাকে না। এ দেশের গণতন্ত্র রুক্ষ। প্রধানমন্ত্রী কোন চেয়ারে বসে আছেন তা তার হয়তো মনে নেই। এই দায়িত্বে থেকে কিভাবে কথা বলতে হয়, তাও তিনি হয়তো জানে না। একজন কূটনৈতিকের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয়। কূটনৈতিকরা সাধারণত সামনে কাউকে হ্যাঁ বলেন না; আবার না’ও বলেন না।
“প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি নাকি সেন্টমার্টিন দিলে ক্ষমতায় থাকতে পারবেন। সেন্টমার্টিন দিয়ে ক্ষমতায় থাকতে পারলে আগেই দিয়ে দিতেন। আমেরিকাতো সেন্টমার্টিন নিয়ে কথা বলেননি। তারা বলেছে, এই দেশে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতন্ত্র নিয়ে”।
বিএনপির এই নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেভাবে কথা বলেছেন, যদি পশ্চিমা গার্মেন্টস শিল্প বা পোশাক রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এখনো দেয়নি। তখন কি হবে? এ দেশের অর্থনীতির কি হবে? গার্মেন্টস শিল্প এর যে মেশিনগুলো আছে, সেগুলোর কি হবে। সেগুলোতো লোহা হিসেবে বেচতে হবে। জানি না, প্রধানমন্ত্রী কেন এভাবে কথা বলছেন, জানি না। তিনি নিজেরটা বোঝেন। জনগণের কথা ভাবে না। তিনি তার পরিবারের প্রতিশোধ নিচ্ছে জনগণের ওপর। কিন্তু আপনিতো অনেক মায়ের বুক খালি করেছেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার থাকার কোন সুযোগ নেই। তিনি কখন যাবে, তা আমি জানি না। তবে যেতে হবে তাকে। কারণ তার স্ট্রেক হোল্ডাররা নড়বড়ে হয়ে গেছে। ধর্মীয় বিশ্বাস মানেই কি জঙ্গিবাদ, ভারত তো হিন্দুত্ব বাদ কায়েম করবে, অথচ মুসলিম দেশ হয়ে বাংলাদেশের মানুষ নামাজ, আযান দিতে পারবে না , এটা তো হয় না।
সভায় বক্তারা বলেন, বর্তমান সরকার আর ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। সেন্টমার্টিন দ্বীপ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যে কথা বলেছেন। এতে তার নামে মামলা হওয়া দরকার। তাকে তো দেশের মানুষ আর চায় না। অথচ তিনি বলেন, “সেন্টমার্টিন দিলে নাকি তিনি ক্ষমতায় থাকতে পারবেন। আপনি প্রধানমন্ত্রী থাকেন আর নে থাকেন, আমরা সেন্টমার্টিনের এক ইঞ্চি মাটিও কাউকে দিতে দিবো না”।
আগামীর বাংলাদেশ সংগঠনের চেয়ারম্যান মো শাহ আলম এর সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, যুব জাগপার সভাপতি আমীর হোসেন আমু প্রমুখ।
Leave a Reply