নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গোটা দেশকে আন্তর্জাতিক খেলাধুলার মাঠ বানিয়েছেন এই অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যে অটুট স্বার্বভৌমত্বের দিশারী ছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। তিনি স্বার্বভৌমত্বকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। কোনো দেশ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো টু শব্দ করতে পারতেন না, গোপন ষড়যন্ত্রতো সবসময় থাকে। কিন্তু আজকে শেখ হাসিনার কারণেই বাংলাদেশের যে মর্যাদা সেটি ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে। শেখ হাসিনার কারণে কথা বলতে পারছে।
শুক্রবার দুপুরে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় এখন দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্বাস্থ্য কামনায় এই দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিইএব) ঢাকা জেলা শাখা। সংগঠনের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার এইচএম আমিনুর রহমান আমিনের সভাপতিত্বে ও প্রকৌশলী মো. জুয়েল রানার পরিচালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হক, হাফেজ মাসুম বিল্লাহ, মৎস্যজীবী দলের মো. আবদুর রহিম, তাঁতী দলের খন্দকার হেলাল উদ্দিন, সিলেট জেলা বিএনপির শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সহ-সম্পাদক তামিম ইয়াহিয়া আহমদ প্রমুখ।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজকে শেখ হাসিনা সেন্টমার্টিন দ্বীপ দেননি বলে ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না মর্মে আশংকা প্রকাশ করেছেন। কেনো এজন্যতো তিনিই দায়ী। তিনি দিনের ভোট রাতে করেন। গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়েছেন। তিনি ভোট চুরি নয় ভোট ছিনতাই করে জোর করে ক্ষমতা দখল করে রেখেছেন। জনগণতো এখন ভোট দিতে যায় না। আর শেখ হাসিনার বশংবদ নির্বাচন কমিশন বলে যে ভোট সুষ্ঠু হয়েছে। আসলে জনগণ এটা বিশ্বাস করে না। কারণ তারা বলে চাকরি রক্ষার জন্য। চুরি করা জিনিস উদ্ধার করা যায়। কিন্তু ভোট তো আত্মসাৎ করে গণভবনে বন্দী রেখেছেন। এখন শেখ হাসিনার সরকারকে জোরে ধাক্কা দিয়ে ভোটাধিকারও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর কঠোর সমালোচনা করে রিজ়ভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনি ভোট চুরি কেনো ছিনতাই করে আপনার অবৈধ ক্ষমতা ধরে রেখেছেন। ভোট স্বাধীনভাবে হলে না হয় চুরির প্রশ্ন আসতো। আপনি চুরিতো আগে করেছেন এখন ডাকাতি আর ছিনতাই করছেন ভোট। বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশন আপনার বশংবদ বশীভূত আপনার নির্দেশেই স্টেটমেন্ট দেন। যে ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে। এইটা না দিলে তো প্রধান নির্বাচন কমিশনের পদ থাকবে না এটা আউয়াল সাহেব খুব ভাল করে জানেন।
কোথাও কোথাও নাকি সিটি নির্বাচন হলো অথচ জনগণই জানে না তারা খবর রাখে না। অনেকেই আমাকে জিজ্ঞেস করে ভাই ভোট হলো কোথায়? কবে ভোট হয়েছে আমি নিজেই তো জানি না।
তিনি বলেন, জনগণের অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে উন্নয়ের ইন্দ্রজাল তৈরি করেছে সরকার। তাদের লোকজনই বিদেশে সাড়ে দশ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয় আপনার সময়ে।এত টাকা পাচার হয় কিভাবে? অনেকেই বলছেন পরিবর্তিত পরিস্থিতি হলে ক্ষমতাসীনদের অনেকেই ধরা পড়ে যাবে যে এই সারে ১০ হাজার কোটি টাকা কারা সরিয়ে ফেললেন।যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসে থেকে জনগণের টাকা লুটপাট করেছেন তাদের বিচার এই দেশেই হবে।
রিজভী আরও বলেন, শেখ হাসিনা নাকি মাথানত করেন না। তাহলে আমেরিকার সহযোগিতার জন্য ভারতকে অনুরোধ করেছেন কেনো? আসলে উনি তলে তলে ঘুষ দিয়ে নিজের পক্ষে রাখার চেষ্টা করেন। মনে রাখতে সবাই কিন্তু ঘুষ খাননা।
তিনি বলেন, আজকে এই সরকারতো লোভী। দেশের মানুষের প্রতি তার কোনো মায়া নেই। ওয়ান ইলেভেনের সময় তিনি তো দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। কিন্তু খালেদা জিয়া সেটা করেন নি। সুতরাং আপনি কয়েকটি ফ্লাইওভার ও পদ্মাসেতু করে দিলেই হলো। জনগণ আপনার ভেলকিবাজি বুঝে।
রিজভী বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সারাজীবন গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করেছেন। আজকে তাকে কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়েছে। তাকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আজকে আওয়ামী লীগ হচ্ছে কসাই। আমাদের প্রত্যেকটি নেতাকর্মী নির্যাতন নিপীড়নের শিকার।
তিনি বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করা হয়েছে। তিনি মূমুর্ষূ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। তার পরিবর্তে তারই সুযোগ্য সন্তান দেশনায়ক তারেক রহমান নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আমরা তার নেতৃত্বে ইনশাআল্লাহ এগিয়ে যাবো।
এসময় যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সহসভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর, বর্তমান সেক্রেটারি আব্দুল মোনায়েম মুন্না, গোলাম মাওলা শাহিন, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুসহ আটক সকল নেতাকর্মীর দ্রুতসময়ের মধ্যে মুক্তি দাবি করেন রিজভী।
Leave a Reply